যে ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্স ব্রাজিলকে পর্যন্ত মারাত্মক বিপাকে ফেলেছিল, সেই ডিফেন্সকে অবলীলায় চূর্ণ করলেন মেসিরা। ৩-০ ফলে জিতে ২০১৪ সালের পর আবারো একবার বিশ্বের সর্বোচ্চ ফুটবল সম্মান জয়ের থেকে এক ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে তারা।
প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারের পর যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আর্জেন্টিনা, তা দেখে আর কোনও প্রতিপক্ষই তাদের নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে না।
কাল দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য লিওনেল মেসিকে ম্যাচের সেরার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
মেসি ভালো পারফরমেন্স করেছেন এটা মেনে নিয়ে অনেকে বলছেন যে কাল ম্যাচের ফেরার পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল হুলিয়ান আলভারেজের। কাল আর্জেন্টিনার তিনটি গোলেই তার বড় অবদান ছিল।
বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে যদি সবথেকে বেশি নজর কেড়ে থাকেন কোনও খেলোয়াড় তিনি হলেন হুলিয়ান আলভারেজ। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে মেসির থেকে দুটো পাস পেয়ে দুটো গোল করে যিনি এখন শিরোনামে। ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকারের স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে খেলতে পেরে তাতে ইতিহাস তৈরি করে তিনি আপ্লুত।
দলকে ফাইনালে তোলাই নয়, গুরু শিষ্যর কাছে ম্যাচটা আরও অনেক কিছু। ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারানোর দিনে মেসি করলেন একটি গোল আর হুলিয়ান আলভারেজ করলেন দুটি গোল। আর এই দুটিই করলেন মেসির পাস থেকে। যার সঙ্গে খেলতে চাইতেন তাঁর সঙ্গে লিখলেন ইতিহাস।
আলভারেজের জন্মস্থান ক্যালচিন, কর্ডোবা, আর্জেন্টিনা। তিনি আর্জেন্টিনার জাতীয়তা ধারণ করেন। একইভাবে, তার ধর্ম ক্যাথলিক এবং তার জন্ম তারিখ অনুসারে, তার রাশিচক্র কুম্ভ। তার বাবার নাম গুস্তাভো আলভারেজ এবং মায়ের নাম মারিয়ানা আলভারেজ। তিনি তার ভাইদের সাথে বড় হয়েছেন। দুই ভাই রাফেল এবং আগু আলভারেজ। তিনি রিভেরা ইন্দারতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।
এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর পরিবারের সবাই মেসির ভক্ত। শৈশব থেকে মেসির খেলা দেখা বড় হয়েছেন। বাড়ির সদস্যরাও চাইলেন আলভারেজ ফুটবল খেলুক। ১০ বছর আগে মেসির সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ হয়েছিল আলভারেজের। তখন থেকেই চাইতেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে ফুটবল খেলতে ও সঙ্গে থাকুক মেসি। কাতার বিশ্বকাপে এসে সেটা পূর্ণ হলো।
২০২১ সালে জাতীয় দলে সুযোগ পান। এরপর ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে যোগ্যতা অর্জনকারী ম্য়াচে প্রথম গোলটা পান। এরপর বিশ্বকাপ সেমিতে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে দুটো গোল। আর দুটোই সুপারহিরো মেসির পাস থেকে।
২০০০ সালের ৩০ জানুয়ারি জন্ম হুলিয়ান ের। তরুণ এই স্ট্রাইকারের বিশেষ গুণ হলো পরিকল্পনা করে খেলা, যা বাকিদের থেকে তাঁকে আলাদা করে। আলভারেজকে লা আরানা বলেও ডাকা হয়। ২০১৮-১৯ মৌসুমে আলভারেজ আর্জেন্টিনার ক্লাব রিভার প্লেটের হয়ে খেলা শুরু করেন। ৫ বছর আর্জেন্টিনার প্রিমিয়ার ডিভিশনে খেলেছেন। রিভার প্লেটের হয়ে ৯৬টা ম্য়াচে ৩৬ গোল করেন।