যে দলটির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার রেকর্ড আশাব্যঞ্জক নয়, সেটি হলো নেদারল্যান্ডস। আগামী শুক্রবার হেভিওয়েট দল দুটি কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে দশম ম্যাচ খেলবে। এর মধ্যে আলবেসেলেস্তেরা ১৯৭৮ সালে স্মরণীয় জয় পেয়েছে। সেবার আর্জেন্টিনা শিরোপাও জেতে। বিশ্বকাপে তারা চার ম্যাচ খেলেছে। বিশ্বকাপে তাদের হারজিত বলতে গেলে সমান সমান।

দুই মহাদেশের দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীর ফুটবল লড়াই শুরু হয় আমস্টারডামে। দিনটি ছিল ২৬ মে ১৯৭৪। সে সময়ের প্রবল প্রতাপশালী নেদারল্যান্ডস সেই ম্যাচে ৪-১ ব্যবধানে জেতে। ঠিক তার এক মাস পর ১৯৭৪ সালের ২৬ জুন জার্মান বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইউহান ক্রুয়েফের নেতৃত্বাধীন ডাচরা ৪-০ ব্যবধানে আকাশি জার্সিদের উড়িয়ে দেয়।

ফাইনালে ডাচরা অবশ্য জার্মানদের কাছে হার মানে। চার বছর পর আর্জেন্টাইনরা বুয়েন্স আয়ার্স বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রুয়েফহীন ডাচদের ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতে। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ১-১ ব্যবধানে অমীমাংসিত ছিল। অতিরিক্ত সময়ে আলবার্তো কেম্পেস আর ড্যানিয়েল বার্তোনি স্বাগতিকদের পক্ষে গোল করেন। পরের বছর সুইজারল্যান্ডের বার্ন নগরীতে ফিফার ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনা আর নেদার‌ল্যান্ডস অংশ নেয়। পেনাল্টি শুটআউটে ৮-৭ ব্যবধানে আর্জেন্টিনা জেতে। ওই ম্যাচে ম্যারাডোনাও অংশ নেন।

পঞ্চম লড়াইটি ছিল বিশ্বকাপে তাদের তৃতীয় ম্যাচ। ১৯৯৮-এর ফ্রেঞ্চ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আজও মাঠে গড়াবে কোয়ার্টার ফাইনাল। ম্যাচের ১২ মিনিটে ডাচ তারকা প্যাট্রিক ক্লুইভার্ট গোলের খাতা খুললেও পাঁচ মিনিট পরই ম্যাচে সমতা ফেরান ক্লদিও লোপেজ। এক পর্যায়ে ডাচ তারকা নুমান লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়েন। এর তিন মিনিট পর ‘ছোট গাধা’ নামে পরিচিত আর্জেন্টাইন তারকা ওর্তেগা ডাচ গোলকিপারকে মাথা দিয়ে গুঁতো মারায় লাল কার্ড পান। ফাইনাল হুইসেল বাজার এক মিনিট আগে ডেনিস বার্গক্যাম্প দুর্দান্ত গোল দিয়ে ডাচদের জয় নিশ্চিত করেন।

মার্সেলো বিয়েলসার যুগে ১৯৯৯ সালের ৩১ মার্চ আমস্টারডামে প্রীতি ম্যাচ (১-১) খেলে আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচে ‘এল লোকো’ (বিয়েলসা) আন্দ্রেজকে দ্বিতীয়ার্ধে নামানোর পাঁচ মিনিট পরেই তুলে নেন। পরে ম্যাচে সমতা আনেন বাতিস্তুতা। আমস্টারডামে আরেকটি প্রীতি ম্যাচ মাঠে গড়ায় ২০০৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। বিয়েলসা বেঞ্চে বসা ছিলেন। আর্জেন্টিনা ০-১ ব্যবধানে হারে।

বিশ্বকাপে উভয় দল আরও দুবার মুখোমুখি হয় এবং দুটো ম্যাচই কোনো গোল হয়নি। একটি ম্যাচ ২০০৬ সালে জার্মান বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচ। বাকিটি ছিল ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। প্রথম ১২০ মিনিট কোনো দলই গোল পায়নি। সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনা টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতে ফাইনালে ওঠে এবং জার্মানির কাছে ১-০ ব্যবধানে হারে। পেনাল্টি শুটআউটের আগেই হেভিয়ের মাসচুরানো আর্জেন্টাইন গোলকিপার সার্জিও রোমিরোকে বলেছিলেন, ‘আজ কিন্তু তোমার কপাল খুলবে।’ রোমিরো সেদিন দুটো পেনাল্টি রুখে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x